অকালে চুল পাকার কারণ ও প্রতিরোধের উপায় – বয়স হলেই যেমন ত্বকে বলিরেখা পড়ে তেমনি বয়স হলেই চুল পাঁকবে। তবে আমাদের চারপাশে এমন অনেকেই আছেন যাদের চুল অকালেই পেঁকে যায়। আর এমনটা মোটেও কারো কাম্য নয়। কিছু সচেতনতাবোধ আপনাকে রক্ষা করবে অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা থেকে।
অকালে চুল পাকার কারণ ও প্রতিরোধের উপায়
অকালে চুল পাকার কারণ –
বংশগত কারণ: রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় স্বজনের চুল অকালেই পেঁকে যায় এমনটা হলে ওই পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের চুল অকালেই পাঁকতে পারে।
হরমোনের সমস্যা: হরমোন হচ্ছে রক্তের ভীষণ জরুরি উপাদান। হাইপোথাইরয়ডিজম এবং হাইপার থাইরয়ডিজম নামে এক ধরণের হরমোনের সমস্যা থাকলে অকালেই চুল পাঁকতে পারে।
মানসিক অবসাদ: অতিরক্ত দুঃখ, কষ্ট, দুশ্চিন্তা থেকে অকালেই চুল পাঁকতে পারে। সোরোটোনিন হরমোন আমাদের তারুণ্য ধরে রাখতে অনেক বড় একটা ভূমিকা পালন করে। মানসিক অবসাদ রক্তে সেরোটোনিন হরমোন এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। যার ফলে মানুষের ত্বক ও চুলের উপর খারাপ প্রভাব পড়ে।
আরো পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার উপায় – ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুল পড়া বন্ধ করুন
ভিটামিনের অভাব: ফোলেট, ভিটামিন বি-১২, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এর অভাবে অকালেই চুল পেঁকে যায়। ভিটামিন সি জাতীয় খাবারের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। আর ভিটামিন সি মানুষের ত্বক ও চুলে পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে। রক্তে ভিটামিন এবং মিনারেল এর অভাব হলে অনেকের চুল অকালেই পেঁকে যায়।
অতিরিক্ত কেমিক্যালের ব্যবহার: চুলে অতিমাত্রায় ডাই, রং ব্যবহার করলেও চুল অকালে পাঁকতে পারে। একটা কথা মনে রাখতে হবে সব প্রসাধনী সব বয়সের মানুষের জন্য উপযোগী নয়। সৌন্দর্যের আশায় অতিরিক্ত কেমিক্যাল এর ব্যবহার, ভেজাল খাবার পরিবেশ দূষণ এর জন্যও চুল পাঁকতে পারে।
অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড: উচ্চমাত্রার প্রোটিন, অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, অতিমাত্রায় কোমল পানীয় এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, বয়স অনুযায়ী দীর্ঘ বছর ওজন বেড়ে থাকলেও মাথার চুল অকালেই পাঁকতে পারে।
অটোইমিউন অসুখ: কিছু অটোইমিউন অসুখেও চুল অকালেই পেঁকে যায়।
আরো জানুনঃ খুশকি দূর করার সহজ উপায় – খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায়
প্রতিরোধের উপায়-
- মৌসুমী ফল, শাক সবজি নিয়মিত খেতে হবে। সবুজ হলুদ ফলের মধ্যে এ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে উচ্চমাত্রায়। যা তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- ধর্ম, কর্ম, ইতিবাচক চিন্তা, সৃজনশীল কাজ মানুষের মানসিক প্রশান্তি যোগায়, মন ভালো থাকলে চুল, ত্বক থাকবে পুষ্টি সমৃদ্ধ।
- নিয়মিত কাঁচা সবজি, মৌসুমী ফল খেতে হবে। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করুন পানি রক্ত পরিষ্কার রাখতে এবং শরীর থেকে রোগ জীবাণু বের করে দিতে সাহায্য করবে।
- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলস্টেরল বা চর্বির মাত্রা সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
- ফাস্টফুড, অতিমাত্রায় কোমলপানীয়, মাদকদ্রব্য, ধূমপান বর্জনীয়।
- নিয়মিত ভালোভাবে চুল আঁচড়াতে হবে। তাহলে চুলের গোড়াতে পুষ্টি সরবরাহ হবে।
- সময় পেলেই হাঁটতে হবে।প্রতিদিন নিয়ম মেনে হাঁটাহাঁটি করলে পুরো দেহের সবগুলো অঙ্গে রক্ত সরবরাহ হবে। ফলে দেহের সব অঙ্গ, ত্বক, চুল ভালো থাকবে।
- সবসময় ঠান্ডা পানিতে গোসল করার অভ্যাস গড়ুন।
- কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপিসহ কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় চুল পেঁকে যায়। চিকিৎকের পরামর্শ ব্যতীত চুলে কলপ, কেমিক্যাল ব্যবহার করবেন না।
- মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী, মানহীন বিউটি পার্লার থেকে সেবা গ্রহণ না করাই ভালো।
- চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত রূপচর্চার জন্য কোনো ওষুধ খাবেন না।
অকালে চুল পাকার কারণ ও প্রতিরোধের উপায় আপনার কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
One comment
Pingback: চুল গজাতে কালোজিরা - নতুন চুল গজাতে কালোজিরা - জানতে হবে